রাসূল সা: এর দুই বছরের কারাজীবন

আরিফুল ইসলাম সোহেল

আসমান ও জমিনের শ্রেষ্ঠ, সুন্দর ও পবিত্রতম মানুষ বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:। সত্যের পথে ঈমানি পরীক্ষায় সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে শিহাবে আবু তালিব উপত্যকায় অর্ধাহার ও অনাহারে বন্দী অবস্থায় জীবনীশক্তি প্রায় নিঃশেষিত হয়ে পড়েছিল। রাসূল সা:-এর চাচা আবু তালিব বন্দীদের মধ্যে অন্যতম। এ জন্য রাসূল সা:-এর দুঃখের শেষ ছিল না। অপলকদৃষ্টিতে বৃদ্ধ চাচা আবু তালিবের দিকে তাকিয়ে দু’চোখের পানিতে বুক ভাসাতেন। আরবের শ্রেষ্ঠ বণিক তিনি। বয়সের ভারে ন্যুজ। তার বয়স ৮০ বছর ছাড়িয়ে গেছে। ক্রমাগত কয়েক বছর ধরে দুঃখ-দুর্দশা, বিপদ-মসিবতের কারণে তার স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ভেঙে পড়েছিল। বিশেষ করে শিবে আবু তালিব গিরিবর্তে অবরোধ তার শক্তি-সামর্থ্য নিঃশেষ করে দিয়েছিল। শুধু স্নেহভাজন ভাতিজা মুহাম্মদ সা:কে ভালোবাসার জন্য শিবে আবু তালিবের বন্দিজীবনে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় অসম্ভব কষ্ট করেছেন তিনি। চাচার এই আত্মত্যাগের জন্যই রাসূল সা:-এর দু’চোখের পানি অঝোরধারায় ঝরত। নিজের কথা ভেবে দুঃখ ছিল না তাঁর। দুঃখ শুধু বয়োবৃদ্ধ চাচা আবু তালিব, প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা রা: বনি হাশেম ও বনু মুত্তালিব গোত্রের বন্দী মাসুম শিশুসহ সঙ্গী-সাথীদের জন্য; যারা সত্যপথের পথিক ও রাসূল সা:-এর বিপ্লবী আন্দোলনের অগ্রসেনানি। যেসব অগ্রসেনানি শুধু সত্যের পথ অবলম্বন করার কারণেই বন্দী বেশে শিহাবে আবু তালিব নামক উপত্যকায় কারাবরণ করে সুদীর্ঘ দুই বছর অন্তরীণ ছিলেন।

শিহাবে আবু তালিবে অন্তরীণের প্রেক্ষাপট
কুরাইশ নেতৃবৃন্দ লক্ষ করলেন যে, অন্যায়-অত্যাচার ও নানাবিধ বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ সা:-এর নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন তথা ইসলামের শক্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। ঈমানি চেতনার সম্মুখ-সমরে অগ্রসর হচ্ছে ইসলামি বিপ্লবের মিছিল। যে মিছিলে ইতোমধ্যে যোগ দিয়েছেন দুর্দান্ত প্রতাপশালী হজরত উমর ফারুক রা: এবং বীর সৈনিক হজরত আমির হামজা রা:-এর মতো নেতৃত্ব। অন্য দিকে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হাবশার অধিপতি নাজ্জাশি মুসলমানদের সসম্মানে আশ্রয়দান করে ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই হাবশা ত্যাগ করে মক্কার প্রতিনিধিদের ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। দিন দিন মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল, যা কোনোভাবে মেনে নিতে পারেনি আবু জাহেলসহ কুরাইশ নেতৃবৃন্দ। তার চোখ রাঙানি, হুঙ্কার, ভয়ভীতির কারণেই মক্কার ব্যক্তিরা আবু জাহেলের ভয়ে সামাজিকভাবে রাসূল সা: ও তার সঙ্গী-সাথীদের বয়কট করেন।

আবু জাহেল ও তার বাহিনী রাসূল সা:কে হত্যার পরিকল্পনাসহ সঙ্গী-সাথীদের চিরতরে একসাথে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিলো। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কূট-কৌশল অবলম্বনহেতু ইসলামবিরোধী অপশক্তি কুরাইশ নেতৃবর্গ মক্কার সমুদয় গোত্রের সমন্বয়ে বনি হাশেম ও বনু মুত্তালিব গোত্রের সাথে ষড়যন্ত্র ও এক পক্ষপাতিত্বমূলক একটি চুক্তি সম্পাদন করল। যে চুক্তি বাস্তবায়নে শর্ত জুড়ে দেয়া হলো-
১. মক্কার কোনো ব্যক্তি বনি হাশেম ও বনু মুত্তালিব গোত্রের সাথে আত্মীয়তা করবে না।
২. ওই গোত্রদ্বয়ের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে কোনো প্রকার পণ্যসামগ্রী বিক্রি করবে না।
৩. এমনকি কোনো প্রকার খাদ্যদ্রব্যও পাঠাবে না। সেই সাথে যত দিন পর্যন্ত তারা (বনি হাশেম ও বনু মুত্তালিব) মুহাম্মদ সা:কে হত্যা (নাউজুবিল্লাহ) করার জন্য আমাদের (কুরাইশ) হাতে সমর্পণ না করবে ততদিন পর্যন্ত এ চুক্তি বলবত থাকবে।

এ চুক্তিপত্রটি মনসুর ইবনে ইকরিমা ইবনে আমের ইবনে হাশেম লিখেছিল। কারো কারো মতে, নজর নফর ইবনে হারেস লিখেছিল। কিন্তু সঠিক ইতিহাস হলো- এই মিথ্যা চুক্তিপত্রটি স্বহস্তে লিখেছিল বোগাইজ ইবনে আমের ইবনে হাশেম। রাসূল সা: এতে হৃদয়ে তীব্র কষ্ট নিয়ে বোগাইজ ইবনে আমেরের জন্য বদদোয়া করেছিলেন এবং এতে তার হাত চিরদিনের জন্য অবশ হয়ে গিয়েছিল। লিখিত চুক্তিপত্রটিতে পবিত্রতার ছাপ দেয়ার জন্য কাবাঘরে আটকে রাখার মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়েছিল। সেই চুক্তি মতে; নবী করিম সা: এবং তাঁর গোত্রকে বন্দী করে সবাইকে একসাথে ধ্বংস করে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে শেষ পর্যন্ত চাচা আবু তালিব অপারগ হয়ে রাসূল সা:কে তাদের হাতে তুলে দেবেন না মর্মে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেন। সেই সাথে সমাজ সংসার ছেড়ে দিয়ে রাসূল সা:সহ বনি হাশেম ও বনু মুত্তালিব গোত্রের নারী-পুরুষ ও মিশুসহ সবাইকে সাথে নিয়ে বাধ্য হয়ে গিরি-দুর্গ শিবে আবু তালিবের মধ্যে আত্মনির্বাসিত হলেন।

বন্দিজীবনে ঈমানের পরীক্ষা ও ধৈর্য
রাসূল সা: ও তাঁর সাথীরা যে ত্যাগ ও কোরবানির উপমা পেশ করেছেন; যা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য ত্যাগ ও কোরবানির ক্ষেত্রে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যুগিয়েছে ত্যাগ ও কোরবানির পথে নতুন উজ্জীবনী শক্তি। যে ত্যাগ ও কোরবানি প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নিয়োজিত ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের জন্য : শত বাধাবিপত্তি, জেল-জুলুম উপেক্ষা করে ঈমানি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার। চলতে শেখাবে রক্ত-পিচ্ছিল কণ্টকাকীর্ণ সিরাতুল মুস্তাকিমের পথে। যে পথ ধরেই ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় জালিমের বন্দিশালায় জেল-জুলুম, হুলিয়া আসবে। সত্যের পথিকদের শরীর হবে ক্ষত-বিক্ষত, রক্ত ঝরিয়ে সত্যের সাক্ষ্য দিয়ে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়ার মতো ঈমানি পরীক্ষায় নিজেকে উত্তীর্ণ হতেই হবে। যেমনটি হয়েছিলেন শিবে আবু তালিবে বন্দী অবস্থায় মুহাম্মদ সা: ও তার সঙ্গী-সাথীরা।

বন্দিজীবনে ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় তিনটি বছর এত কঠিন ছিল যে, জঠরজালা নিবারণের জন্য তাদেরকে গাছের পাতা পর্যন্ত খেতে হয়েছে। হজরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রা: ক্ষুধার জ্বালায় শিবে আবু তালিবে বন্দী বেশে এক রাতে একটি শুকনো চামড়া আগুনে ঝলসিয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেছিলেন। পানি ও খাদ্যদ্রব্যের অভাবে বৃক্ষপত্র ভক্ষণের ফলে তাদের মল ছাগ ও মেষাদির মলের মতো হয়ে পড়েছিল। এই তিন বছরের মধ্যে তাদের মধ্যকার শিশু পুত্র-কন্যাসহ বন্দী অবস্থায় অনেকেই মৃত্যুবরণ করে। এর পরও নিষ্পাপ মাসুম ছোট শিশুরা যখন ক্ষুধা আর পিপাসায় অস্থির হয়ে গগনবিদারী চিৎকার করত; তখন আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠলেও বাইরে থেকে পাষণ্ড হৃদয় কুরাইশরা সেই ক্রন্দন শুনে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ত। আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে সুখ অনুভব করত বেঈমান কুরাইশ নেতারা। আবার তাদের মধ্যে কোনো কোনো ব্যক্তি ও নেতৃবর্গ দুঃখিতও হতো। সহৃদয় ব্যক্তিদের মাঝ থেকে হজরত খাদিজা রা:-এর নিকটাত্মীয় হাকিম ইবনে হাজাম নিজ দাসের মাধ্যমে হজরত খাদিজা রা:-এর কাছে বন্দীদের জন্য সামান্য খুরমা ও যব পাঠাচ্ছিলেন। কিন্তু পথিমধ্যে আবু জাহেল দেখতে পেয়ে তা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়।

আবুল বোখতারি সেখানে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘এক ব্যক্তি তার ফুফু খাদিজা রা:-এর কাছে সামান্য খাবার পাঠাচ্ছে, তাতে তুমি বাধা দিচ্ছো কেন? তুমি এত নীচ।’ এভাবে হিসাম ইবনে আমেরি নামে এক ব্যক্তি বনি হাশেম গোত্রের কাছে গোপনে শিবে আবু তালিব কারান্তরালে খাবার পাঠাতেন। যা কোনোভাবে মেনে নিতে পারেনি আবু জাহেলসহ কুরাইশ নেতৃবৃন্দ। তাদের অবস্থান ও ষড়যন্ত্র ছিল খুবই সুদৃঢ়। এক দিকে কুরাইশদের ষড়যন্ত্র ও শয়তানি লীলা; অন্য দিকে সেই অবস্থান থেকেই ধৈর্যের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন ও মনুষ্যত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পৃথিবীবাসীর জন্য স্থাপন করলেন শিবে আবু তালিবে বন্দী রাসূল সা: ও তার সঙ্গী-সাথীরা।

বন্দিজীবন থেকে মুক্তি লাভ
সুদীর্ঘ তিনটি বছর শিবে আবু তালিবে অবরুদ্ধ থাকার পর শেষ পর্যন্ত কুরাইশদের পক্ষ থেকে রাসূল সা: ও তার সঙ্গী-সাথীদের মুক্তির আন্দোলন শুরু হলো। চুক্তি ভঙ্গ করতে কুরাইশদের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা শিহাব ইবনে আমের ও আবদুল মুত্তালিব দৌহিত্র যুবায়েরকে সাথে নিয়ে উভয়ে মিলে মোতয়াম ইবনুল আদ্দির কাছে গিয়ে হাজির হলেন। সেখানে আবুল বোখতারি, ইবনে হিশাম এবং যুময়া ইবনুল আসওয়াদ এ চুক্তি ভঙ্গ ও তাদের মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে সার্বিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে শিবে আবু তালিব থেকে বন্দীদের মুক্ত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। পরদিন উল্লেখিত সবাই মিলে পবিত্র হারাম শরিফে উপস্থিত হয়ে সেখানে যুবায়ের সমবেত জনতার উদ্দেশে সম্বোধন করে বলেন : ‘হে মক্কাবাসী! এটি কেমন কথা যে, আমরা সুখশান্তিতে বসবাস করব। ভালো ভালো খাবার খাবো। আর বন্দী বনি হাশেমদের ভাগ্যে সামান্য খাবারও জুটবে না? বন্দী বেশে তারা মানবেতর জীবন যাপন করবে; তা হয় না। খোদার কসম! বন্দী হওয়ার আগে যে অন্যায় বন্দিচুক্তি হয়; সে চুক্তিপত্র ছিঁড়ে না ফেলা পর্যন্ত আমি শান্ত হবো না।’ এ কথা শোনার পর আবু জাহেল সাথে সাথে ঘোষণা করল- ‘সাবধান! এ চুক্তিপত্রের বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদের পক্ষে কাউকে কিছু করতে দেয়া হবে না।’ যুময়া দাঁড়িয়ে বললেন- ‘তুমি মিথ্যাবাদী! এ চুক্তি সম্পাদনের সময় আমরা রাজি ছিলাম না।’

এমন বাগ্বিতণ্ডার মধ্য দিয়ে যখন দুইপক্ষ হট্টগোল শুরু করল; ঠিক সে সময় বন্দীদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের নজির উপস্থাপন করার জন্য রাসূল সা:-এর পরামর্শে বৃদ্ধ চাচা আবু তালিব গিরিগুহা থেকে বাইরে এসে ওই হট্টগোল সভামঞ্চে উপস্থিত হয়ে ঘোষণা করলেন- ‘তোমাদের ওই প্রতিজ্ঞাপত্র আল্লাহর মনোনীত নয়। বিশ্বাস না হয় গিয়ে দেখ চুক্তিপত্রটি কীট ও পোকামাকড় কেটে নষ্ট করে ফেলেছে। এ কথা যদি সত্য না হয়, তবে নিশ্চয়ই আমি মুহাম্মদকে তোমাদের হস্তে সমর্পণ করতে রাজি আছি। আর যদি সত্য হয়; তবে তোমাদের উচিত আমাদের সাথে এরূপ শত্রুতা না করে বন্দিজীবন থেকে আমাদের মুক্তি দেয়া।’ কুরাইশ নেতৃবর্গ কৌতূহল ও তাচ্ছিল্যভরে বলল- ‘এ ঘটনা যদি সত্য হয়, তবে মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল, এটিও সত্য।’ মোতয়াম ইবনে আদি নামক এক সাহসী ব্যক্তি দৌড়ে গিয়ে হারাম শরিফে আবু জাহেল কর্তৃক সংরক্ষিত চুক্তিপত্রটি দ্রুত নিয়ে এলে উপস্থিত সবাই দেখতে পেল একমাত্র আল্লাহর নামটি ছাড়া আর সবই পাঠের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

মোতয়াম ইবনে আদি অবশিষ্ট চুক্তিপত্রটি স্বহস্তে ছিঁড়ে ফেলেন। আল্লাহর প্রত্যক্ষ সাহায্য ও চুক্তিপত্র লেখক বোগাইজ ইবনে আমেরের হাত অবশ হয়ে যাওয়ার দৃশ্যপট সামনে রেখে আবু জাহেল ও কুরাইশ নেতৃবৃন্দ নিরুৎসাহ হয়ে স্থির দাঁড়িয়ে রইল। অতঃপর জনতা ও কুরাইশ নেতৃবৃন্দের সামনে আবু জাহেলকে পদদলিত করে মোতয়াম ইবনে আদি, ইবনে কায়েস, যুময়া ইবনুল আসওয়াদ ও আবুল বোখতারি প্রমুখ মিলে সশস্ত্র হয়ে যুবায়েরের নেতৃত্বে উন্মুক্ত তরবারি নিয়ে তৎক্ষণাৎ শিবে আবু তালিব দুর্গে গমন করে বন্দীদের মুক্ত করে নিয়ে এলেন। রাসূল সা: সহ তার সঙ্গী-সাথী বনি হাশেম গোত্রকে অবরোধ থেকে উদ্ধার করে শিবে আবু তালিবের অন্তরীণ জীবন থেকে নিয়ে এলেন স্বাধীন, খোলা-আকাশ ও নির্মল আলোর মুক্ত সমাজে।

অধ্যক্ষ, জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ